রক্তের হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সাহায্য করবে যেসকল খাবার
রক্তের হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সাহায্য করবে যেসকল খাবার সম্পর্কে আজকে আমরা জানবো কিন্তু তার আগে আমরা জানবো আসলেই কি আমরা হিমোগ্লোবিন ফলমূল চিনে থাকি। আর কিভাবে যে ফলমূল খেলে হিমোগ্লোবিন বাড়বে সেটা নিয়ে আজকে আমরা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব।
এছাড়াও আজকে আর্টিকেলে আমরা জানবো ফলের রস খেলে কি হিমোগ্লোবিনের কার্যকারিতা বাড়ে এবং হিমোগ্লোবিন বাড়াতে লাল মাংস কতটা কার্যকরী কাজ করে থাকে এ বিষয়ে আজকে আমরা জানবো তাহলে চলুন হিমোগ্লোবিন বিষয়ে সব অজানা প্রশ্ন নিয়ে আজকের এই আর্টিকেল শুরু করা যাক।
পোস্ট সূচিপত্রঃ রক্তের হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সাহায্য করবে যেসকল খাবার
- রক্তের হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সাহায্য করবে যেসকল খাবার
- হিমোগ্লোবিন বাড়ানোর জন্য আয়রন সমৃদ্ধ খাবারে
- ফলের রস কি হিমোগ্লোবিন বাড়াতে কার্যকর
- হিমোগ্লোবিনের জন্য শাকসবজি এবং তাদের উপকারিতা
- গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় খাবার
- হিমোগ্লোবিন বাড়াতে লাল মাংস কতটা কার্যকর
- ডিম এবং দুধ হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সাহায্য করে
- চকলেট এবং বাদাম কি রক্তস্বল্পতা কমায়
- ভিটামিন সি এবং আয়রন সমৃদ্ধ খাবারের সংমিশ্রণ
- আমাদের শেষ কথা
রক্তের হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সাহায্য করবে যেসকল খাবার
রক্তের হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সাহায্য করবে যেসকল খাবার তার মধ্যে অন্যতম হলো আয়রন একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। আয়রন শরীরে হিমোগ্লোবিন উৎপাদনে সহায়তা করে যা রক্তের মাধ্যমে অক্সিজেন পরিবহন নিশ্চিত করে। আয়রন সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে লাল মাংস, লিভার এবং মুরগির মাংস আর মাছ উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়া উদ্ভিজ উৎস থেকে আয়রন পেতে হলে এবং পালং শাক, মেথি শাক, ও কুমড়ার বীজ খাওয়া উপকারী। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় আয়রন সমৃদ্ধ খাবার অন্তর্ভুক্ত করলে রক্তশূন্যতার ঝুঁকি কমে যায়।
হিমোগ্লোবিন বাড়াতে ভিটামিন সি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে কারণ এটি শরীরে আয়রনের শোষণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে লেবু, কমলা এবং আমলকি,স্ট্রবেরি ও পেঁপে অন্যতম। যদি আপনি আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খান তাহলে সেগুলোর সাথে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল বা রস খেলে এর কার্যকারিতা দ্বিগুণ হয়ে যায়। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও উন্নত করে।
ফলমূল ও বাদাম হিমোগ্লোবিন বাড়ানোর জন্য চমৎকার উৎস। আনার ও আপেল এবং কিসমিস আর অন্যান্য ফ্রুটে প্রয়োজনীয় খনিজ থাকে। আনার রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে এবং হিমোগ্লোবিনের ঘাটতি পূরণের সাহায্য করে। কিসমিস ও বাদাম বিশেষ করে কাজু এবং আখরোট আয়রন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সরবরাহ করে যা রক্তকে বিশুদ্ধ রাখতে এবং হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে।
প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন ডিম, দুধ এবং লেগুম রক্তের গুণগত মান উন্নত করতে সাহায্য করে এবং এগুলো শরীরকে প্রয়োজনীয় অ্যামিনো এসিড সরবরাহ করে যা হিমোগ্লোবিন উৎপাদনের সহায়ক। শিমের বিচি এবং ডাল হিমোগ্লোবিন বাড়ানোর পাশাপাশি পুষ্টির ঘাটতি পূরণে কার্যকর। এসব খাবার শুধু রক্তের মান উন্নত করে না বরং শরীরকে সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
হিমোগ্লোবিন বাড়ানোর জন্য আয়রন সমৃদ্ধ খাবারে
আয়রন রক্তের হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সাহায্য করবে যেসকল খাবার এবং এরা অক্সিজেন পরিবহনের জন্য অপরিহার্য একটি উপাদান। প্রাণীজ উৎস থেকে আয়রন সহজে শোষিত হয়। যা হিমোগ্লোবিন ভারতের দ্রুত কাজ করে থাকে। বিশেষ করে গরুর কলিজা ও মুরগির মাংস এবং মাছের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে হিম আয়রন থাকে। এই খাবারগুলো শরীরের আয়রনের চাহিদা পূরণ করে রক্তশূন্যতা রোধ করতে সাহায্য করে। সঠিক পরিমাণে এসব খাবার নিয়মিত গ্রহণ করলে রক্তের কোষের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায় এবং শরীর শক্তিশালী থাকে।
যারা নিরামিষ ভোজী তাদের জন্য উদ্ভিজ উৎস থেকে আয়রন পাওয়া সম্ভব। যেমন পালং শাক ও কুমড়ার বীজ ও ব্রকলি আয়রনের চমৎকার উৎস। এসব খাবার ননহীন আয়রন থাকলেও, ভিটামিন সি যুক্ত খাবারের সাথে খেলে আয়রন শোষণের হার বাড়ে। উদ্ভিজ উৎস থেকে প্রাপ্ত আয়রন শরীরে পুষ্টির ভারসাম্য বজায় রাখে এবং রক্তের হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নিয়মিত সব খাবার খাওয়া স্বাস্থ্যকর রক্ত প্রবাহ নিশ্চিত করতে সহায়ক।
শস্য এবং ডাল আয়রনের দারুন উৎস। বিশেষ করে মসুর ডাল এবং ছোলা আর কালো ছোলা ও রাজমা আয়রণ সমৃদ্ধ। এসব খাবার শুধু হিমোগ্লোবিন বাড়ায় না বরং প্রোটিন এবং ফাইবারের চাহিদা ও পূরণ করে। বাদামি চাল এবং ওটসের মত পূর্ণ শস্য আয়রনের মাত্রা উন্নত করতে সহায়ক। এগুলো হজমে সাহায্য করার পাশাপাশি রক্তশূন্যতা কমায়। ডাল এবং শস্য খাবারের তালিকায় রাখলে দৈনন্দিন আয়রনের চাহিদা সহজে পূরণ করা যায়।
কিসমিস এবং খেজুর আর আখরোট আর কাজু হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধিতে অত্যন্ত কার্যকর। এই শুকনো ফল এবং বাদামে উচ্চমাত্রায় আয়রন ও প্রয়োজনীয় খনিজ রয়েছে। যা শরীরের রক্ত উৎপাদন বাড়ায়। খেজুর এবং কিসমিস রক্তে আয়রনের ঘাটতি পূরণে সাহায্য করে এবং শক্তি যোগায়। এগুলো সহজে গ্রহণযোগ্য এবং দিনে যেকোনো সময় খাওয়া সম্ভব। বাদাম এবং শুকনো ফল আয়রনের পাশাপাশি আন্টি অক্সিডেন্ট সরবরাহ করে যা কোষের ক্ষতি প্রতিরোধ করে।
ফলের রস কি হিমোগ্লোবিন বাড়াতে কার্যকর
আনারের রস রক্তের হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সাহায্য করবে যেসকল খাবার এর মধ্যে একটি এবং বিশেষভাবে কার্যকর একটি ফল। এতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন সি থাকে যা রক্ত উৎপাদনে সহায়ক। আনারের রস রক্তে অক্সিজেন পরিবহন ক্ষমতা উন্নত করে এবং রক্তশূন্যতা কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া এটি শরীরকে শক্তি যোগায় এবং ক্লান্তি দূর করে। যারা রক্তশূন্যতায় ভুগছেন তাদের জন্য প্রতিদিন এক গ্লাস আনারের রস উপকারী হতে পারে।
বিটরুট রক্তের হিমোগ্লোবিন বাড়ানোর জন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন এবং ফোলেট এবং ফাইবার থাকে। বিটরুট রস শরীরে নতুন রক্তকণিকা তৈরিতে সাহায্য করে এবং রক্তের প্রবাহ উন্নত করে। সাহায্য করে এবং রক্তশূন্যতার প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। বিটরুট রসের নিয়মিত ব্যবহার শরীরকে সাথে যে রাখে এবং রক্তের প্রয়োজনীয় খনিজ সরবরাহ নিশ্চিত করে।
কমলার রসে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে যা শরীরে আয়রনের শোষণ ক্ষমতা বাড়ায়। যদিও কমলার রসে সরাসরি আয়রন থাকে না এটি খাদ্য থেকে আয়রন শোষণে বিশেষভাবে কার্যকর। আয়রন সমৃদ্ধ খাবারের সাথে কমলার রস খাওয়া হিমোগ্লোবিন বাড়ানোর জন্য আদর্শ। এটি রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ফলস্বরূপ হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধির জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ড্রাই ফ্রুট যেমন কিসমিস এবং খেজুর আখরোট থেকে তৈরি রস হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সহায়ক এ রসের প্রয়োজনীয় আয়রন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আর প্রাকৃতিক চিনি থাকে যা শরীরকে শক্তি যোগায়। এটি দ্রুত হিমোগ্লোবিনের ঘাটতি পূরণ করে এবং ক্লান্তিক কমায়। বিশেষ করে শীতের সময় ড্রাই ফ্রুট রস খাওয়া শরীরকে উষ্ণ রাখে এবং রক্ত উৎপাদনে সহায়তা করে।
হিমোগ্লোবিনের জন্য শাকসবজি এবং তাদের উপকারিতা
পালং শাক রক্তের হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সাহায্য করবে যেসকল খাবার এর মধ্যে একটি এবং অন্যতম কার্যকরী শাকসবজি। এতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন এবং ভিটামিন সি রয়েছে যার রক্তে হিমোগ্লোবিন উৎপাদনে সাহায্য করে। এই শাকের একটি বিশেষ উপকারিতা হলো এটি সহজে হজম হয় এবং শরীরের দ্রুত আয়রন সরবরাহ করে। পালং শাক শুধু রক্তশূন্যতা কমায় না বরং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও বৃদ্ধি করে। এটি প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখতে পারলে রক্তের গুনমান উন্নত হয়।
আরো পড়ুনঃ খুব বেশি ভিটামিনের অভাব হলে কি খাবেন
ব্রকলি ভিটামিন সি এবং আয়রনের অসাধারণ মিশ্রণ যা রক্তের হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সহায়ক। এতে ফাইবার এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট হয়েছে যা শরীরকে টক্সিন মুক্ত রাখতে সাহায্য করে। ব্রকলি রান্না বা সালাদে ব্যবহার করলে এটি দ্রুত শরীরে শোষিত হয়। এটি শুধুমাত্র রক্তের মান উন্নত করে না বরং শরীরের জ্বালানি উৎপাদনে সহায়তা করে। যারা নিয়মিত ব্রকলি খায় তাদের রক্তে কোষের উন্নতি হয় এবং ক্লান্তি কমে যায়।
মেথি শাক আয়রন এবং ফোলেটের একটি চমৎকার উৎস যা হিমোগ্লোবিন বাড়ানোর জন্য অপরিহার্য। এটি রক্তশূন্যতা দূর করার পাশাপাশি শরীরকে ডিটক্সিফাই করতে সাহায্য করে। মেথি শাকের নিয়মিত সেবন রক্ত প্রবাহ উন্নত করে এবং শক্তি যোগায়। এটি রান্না করে বা স্যুপে যোগ করে খাওয়া যেতে পারে। মেথি শাক পুষ্টির ভারসাম্য বজায় রেখে শরীরকে সুস্থ এবং সক্রিয় রাখে।
গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় খাবার
গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়ানোর জন্য প্রাণীর উৎস যেমন লাল মাংস এবং মুরগি আর মাছ অত্যন্ত কার্যকর। এই খাবারগুলোতে হিম আয়রন থাকে যা শরীর সহজে শোষণ করতে পারে। বিশেষ করে গরুর কলিজা আয়রনের একটি উচ্চ মাত্রার উৎস যা রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে সাহায্য করে। গর্ভাবস্থায় নিয়মিত এসব খাবার খেলে মায়ের শরীরে রক্ত সঞ্চালন উন্নত হয় এবং ভ্রুনের উন্নয়নে সহায়তা করে। তবে ডাক্তারি পরামর্শ নিয়ে পরিমিত পরিমাণে গ্রহণ করা উচিত।
পালং শাক এবং মেথি শাক গর্ভাবস্থায় আয়রনের অভাব পূরণের সহায়ক। এই শাকসবজি গুলোতে ফোলেট এবং ভিটামিন সি বিদ্যমান যা শরীরের আয়রন শোষণ ক্ষমতা বাড়ায়। উদ্ভিদ উৎস থেকে প্রাপ্ত আয়রন রক্ত হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং প্রাকৃতিকভাবে শরীরকে সতেজ রাখে। গর্ভবতী নারীরা এসব শাকসবজি রান্না করে বা সুপ আকারে গ্রহণ করলে আরো বেশি উপকারিতা পেতে পারে।
গর্ভাবস্থায় আনার এবং আপেল ও খেজুর এবং অন্যান্য শুকনো ফল হিমোগ্লোবিন বাড়ানোর জন্য খুবই কার্যকর। এইসব খাবারে প্রচুর পরিমাণে আয়রন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আর প্রাকৃতিক চিনি থাকে যা মায়ের শরীরে রক্ত উৎপাদন বাড়ায়। এছাড়া শুকনো ফল থেকে পাওয়া আয়রন সহজে হজম হয় এবং শক্তি সরবরাহ করে। প্রতিদিন এক মুঠো শুকনো ফল খাওয়া গর্ভবতী মায়ের শারীরিক সুস্থতা নিশ্চিত করতে সহায়তা করে।
হিমোগ্লোবিন বাড়াতে লাল মাংস কতটা কার্যকর
লাল মাংস হিমোগ্লোবিন বাড়ানোর অন্যতম প্রধান উৎস। এতে প্রচুর পরিমানে হিম আয়রন থাকে যা শরীর সহজে শোষণ করতে পারে। হিম আয়রন রক্তের লোহিত রক্ত কণিকার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গরুর মাংস এবং ভেড়ার মাংস বা গরুর কলিজা খাওয়া রক্তশূন্যতার সমস্যা দূর করতে সহায়ক। নিয়মিত লাল মাংস খেলে শরীরের দ্রুত হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং অক্সিজেন পরিবহনে উন্নতি ঘটে।
আরো পড়ুনঃ ডালিম কিভাবে রক্তে প্লাটিলেট বাড়ায় জানুন
লাল মাংসে আয়রন ছাড়াও ভিটামিন বি১২ এবং জিংক আর প্রোটিন থাকে যার রক্ত উৎপাদনের জন্য অত্যন্ত উপকারী। ভিটামিন বি১২ রক্ত কণিকার বৃদ্ধি ও সুস্থতায় সহায়তা করে। একই সাথে প্রোটিন শরীরের টিসুগুলো মেরামত করে এবং নতুন কোষ তৈরিতে সাহায্য করে। গরুর মাংসের একটি নির্দিষ্ট অংশ যেমন ফাইলেট বা স্টেক, সঠিক পরিমাণে খেলে এটি দ্রুত কার্যকর ফলাফল প্রদান করে।
যদিও লাল মাংস হিমোগ্লোবিন বাড়াতে কার্যকর এটি পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত। অতিরিক্ত লাল মাংস খেলে কোলেস্টরেল বা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন লাল মাংস খাদ্য তালিকায় রাখলে প্রয়োজনে পুষ্টি পাওয়া যায়। এটি রান্নার সময় চর্বি কমিয়ে তৈরি করা আরো স্বাস্থ্যকর।
ডিম এবং দুধ হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সাহায্য করে
ডিম হিমোগ্লোবিন বাড়ানোর জন্য একটি সহজ এবং কার্যকরী খাবার। বিশেষত ডিমের কুসুমে আয়রন এবং ভিটামিন বি ১২ বিদ্যমান যা রক্ত কণিকার গঠন এবং অক্সিজেন পরিবহনের সাহায্য করে। পাশাপাশি ডিমে থাকা প্রোটিন রক্ত কোষের বৃদ্ধি এবং রক্ষণাবেক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাতে পালন করে থাকে। নিয়মিতভাবে সিদ্ধ বা পোচ ডিম খেলে শরীরের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা দ্রুত উন্নত হয়। এটি রক্তস্বল্পতা কমানোর পাশাপাশি শক্তি বৃদ্ধিতে ও সহায়ক।
দুধ হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধিতে পরোক্ষভাবে ভূমিকা পালন করে। এতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম এবং প্রোটিন আর ভিটামিন ডি রয়েছে। যা হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখার পাশাপাশি রক্ত উৎপাদনে সাহায্য করে। যদিও দুধে আয়রন এর পরিমাণ কম, এটি আয়রন শোষণ প্রক্রিয়াকে উন্নত করে। বিশেষত গর্ভবতী নারী ও বৃদ্ধদের জন্য দুধ একটি আদর্শ পানীয় বা শরীরকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি যোগায়।
ডিম এবং দুধ একসাথে গ্রহণ করলে হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধিতে আরো কার্যকর প্রভাব ফেলে। এই দুই খাবার একসঙ্গে শরীরের প্রয়োজনীয় আয়রন এবং প্রোটিন আর ক্যালসিয়াম সরবরাহ করে। সকালের নাস্তায় দুধের সাথে ডিম খাওয়া একই চমৎকার পুষ্টিকর অভ্যাস যা রক্তস্বাস্থ্যের উন্নতি করে এবং শরীরকে সজীব রাখে। বিশেষত শিশুদের এবং কর্মজীবী মানুষের জন্য এটি একটি সহজ কাজ এবং কার্যকারী সমাধান।
চকলেট এবং বাদাম কি রক্তস্বল্পতা কমায়
চকলেট বিশেষ করে ডার্ক চকলেট রক্তস্বল্পতা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এতে আইরন এবং ফ্লাবনয়েডস রয়েছে রক্ত কণিকার উৎপাদন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। চকলেটের উচ্চ ফ্লাবনয়েডস উপাদান শরীরের রক্ত প্রবাহ উন্নত করে এবং অক্সিজেন পরিবহনের সহায়তা করে। যারা রক্তস্বল্পতায় তাদের পরিমিত পরিমাণের ডার্ক চকলেট খাওয়া উচিত। এতে রক্তসল্পতা দূর হওয়ার পাশাপাশি মানসিক চাপ কমাতেও কার্যকর।
আরো পড়ুনঃ স্বাস্থ্যকে ঠিক রাখতে ফলমূল ও শাকসবজি
বাদাম বিশেষ করে কাঠবাদাম এবং কাজুবাদাম আর আখরোট আয়রন এবং প্রোটিনের ভালো উৎস। এগুলো হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি করতে সহায়ক। বাদামে থাকা প্রাকৃতিক ফ্যাট এবং ভিটামিন শরীরের পুষ্টি বজায় রাখতে এবং রক্ত স্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন এক মুঠো বাদাম খেলে রক্ত শূন্যতা কমে এবং শরীরের শক্তি বৃদ্ধি পায়। বাদামের সহজ হজম ক্ষমতায় খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আদর্শ করে তোলে।
চকলেট এবং বাদামের মিশ্রণ রক্তস্বল্পতা কমাতে দ্বিগুণ কার্যকর হতে পারে। এই দুই খাবার একত্রে খেলে শরীর প্রয়োজনীয় আয়রন এবং প্রোটিন আর এন্টিঅক্সিডেন্ট পায় যা রক্তের গুণমান উন্নত করে। সকালের নাস্তায় বা স্ন্যাক্স হিসেবে চকলেট এবং বাদাম মিশ্রণ গ্রহণ করলে এটি রক্তশূন্যতা দূর করতে সহায়ক হয়।
ভিটামিন সি এবং আয়রন সমৃদ্ধ খাবারের সংমিশ্রণ
ভিটামিন সি এবং আয়রন সমৃদ্ধ খাবারের মিশ্রণ শরীরের হিমোগ্লোবিন বাড়ানোর ক্ষেত্রে অত্যন্ত কার্যকর। ভিটামিন সি শরীরে আয়রন শোষণ ক্ষমতা বাড়ায় যা উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে প্রাপ্ত আয়রন শোষণের সহায়ক। পালং শাকের সাথে লেবুর রস মিশিয়ে খেলে শরীর সহজেই আয়রন গ্রহণ করতে পার। নিয়মিত সংমিশ্রণ খাদ্য তালিকায় রাখলে রক্তস্বল্পতা দূর হয় এবং রক্তের অক্সিজেন সরবরাহের ক্ষমতা উন্নত হয়।
আয়রনসমৃদ্ধ খাবার যেমন ডাল ও পালং শাক এবং লাল মাংসের সাথে ভিটামিন সি যুক্ত ফল যেমন কমলা আনারস বা লেবুর রস খাওয়া শরীরের জন্য আদর্শ। এটি শুধু হিমোগ্লোবিন বাড়ায় না বরং শরীরকে শক্তিশালী ও সজীব রাখে।
আমাদের শেষ কথা
রক্তের হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সাহায্য করবে যেসকল খাবার সে সম্পর্কে আমরা জানলাম এবং ভিটামিন সি এবং আয়রন সমৃদ্ধ খাবারের সংমিশ্রণ কিভাবে আমাদের শরীরে উপকার করতে পারে এ সম্পর্কেও আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। এবং আপনাদের জানানোর চেষ্টা করেছি যে কিভাবে রক্তে হিমোগ্লোবিন আমাদের শরীরে তৈরি হয় এবং কি কি শাকসবজি খেলে আমাদের শরীর বেশি উপকারিতা পাবে আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন।
আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যমূলক আর্টিকেল যদি আরো পড়তে চান তাহলে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন। কারণ আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যমূলক আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি। 37147
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url