রক্ত আমাশয় কতদিন থাকে
রক্ত আমাশয় কতদিন থাকে এমন অনেকে আছেন যারা এই সম্পর্কে জানেন না এবং রক্ত আমাশয়ের সঠিক সমাধান কোনটি তাদের এটা জানা নেই। এর আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা আজকে জানবো রক্ত আমাশয় হলে কিভাবে সঠিক নিয়মে ওষুধ খাওয়া যায় এবং কিভাবে তার সমাধান করা যায়।
![]() |
রক্ত আমাশয় হলে আমরা জানব যে দই খাওয়া যাবে না মাছ খাওয়া যাবে এই দুইটা খাবারের মধ্যে কোন খাবার রক্ত আমাশয় রোগীর জন্য উপকারী এ বিষয়ে সম্পর্কে আজকে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হবে। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।
পোস্ট সূচিপত্রঃ রক্ত আমাশয় কতদিন থাকে জেনে নিন
রক্ত আমাশয় কতদিন থাকে
রক্ত আমাশয় এক ধরনের অন্ত্রের সংক্রমণ যা সাধারণত সিগেলা ব্যাকটেরিয়া বা এন্টামিবা হিস্টোলিটিকা দ্বারা হয়। এটি পেট ব্যথা এবং ডায়রিয়া আর রক্ত মিশ্রিত মলের কারণে পরিচিত। রক্ত আমাশয় সঠিকভাবে কখনোই বলা সম্ভব না যে রক্ত আমাশয় কতদিন থাকে তবে ধারণা করা হয় পাঁচ থেকে সাত দিনের মধ্যে রোগের তীব্রতা কমে যায়। তবে সঠিক চিকিৎসা না হলে জটিলতা বাড়তে পারে।
রক্তের আমাশয় অন্ত্রের এমন একটি সংক্রমণ যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দূষিত খাদ্য বা পানীয় গ্রহণের মাধ্যমে ছড়ায়। প্রধান কারণ হলো শিগেলা ব্যাকটেরিয়া এবং অ্যান্টামিবা হিস্টোলিটিকা প্রোটোজোয়া। এ রোগের লক্ষণ গুলোর মধ্যে পেটের ব্যথা এবং মলের সঙ্গে রক্ত বা পুঁজ মেশানো এবং অতিরিক্ত দুর্বলতা উল্লেখযোগ্য। অনেক সময় জ্বর বমি এবং শরীরে পানি শূন্যতা দেখা দেয়। শিশু এবং বৃদ্ধরা বেশি ঝুঁকিতে থাকে।
রক্ত আমাশয়ের চিকিৎসায় প্রধানত তরল এবং ইলেকট্রোলাইট সরবরাহ গুরুত্বপূর্ণ কারণ এ রোগে শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে পানি বেরিয়ে যায়। চিকিৎসকরা অ্যান্টিবায়োটিক বা অ্যান্টি প্রোটোজোয়াল ওষুধ নির্ধারণ করে সংক্রমণের ধরন বুঝে। রোগীকে হালকা এবং সহজপাচ্য খাবার দেওয়া উচিত। যেমন ভাতের মাড়, সিদ্ধ আলু স্যুপ। অতিরিক্ত লবণ ও চিনি মিশ্রিত পানীয় শরীরের শক্তি ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করে।
রক্ত আমাশয় রোগের ওষুধ কোনটি
ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণজনিত রক্ত আমাশয়ের ক্ষেত্রে সাধারণত অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়। রক্ত আমাশয় যদি কারো হয়ে থাকে এবং সে যদি তার আমাশয় সম্পর্কে না বুঝে তাহলে রক্ত আমাশয় কতদিন থাকে এবং এর ব্যাকটেরিয়া দূর করতে সিপ্রোফ্লক্সসিন অন্যতম শিগেলা ব্যাকটেরিয়া বিরুদ্ধে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। এছাড়া আজিথ্রোমাইসিন এবং নলিডিক্সিক অ্যাসিড সংক্রমণ দ্রুত কমাতে সহায়তা করে। সঠিক মাত্রা এবং নির্ধারিত সময় মত অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ করলে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আসে এবং জটিলতা কমে যায়।
প্রোটোজোয়া সংক্রমণ বিশেষ করে এন্টামিবা হিস্টোলিটিকা থেকে সৃষ্ট রক্ত আমাশয় এর চিকিৎসায় মেট্রনিডাজল অন্যতম প্রধান ওষুধ। এছাড়া টিনিডাজল এবং সেকনিডাজল প্রোটোজোয়াল সংক্রমণ দূর করতে ব্যবহৃত হয়। এসব ওষুধ অন্ত্র থেকে সংক্রমণ সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করে এবং রক্ত মিশ্রিত ডায়রিয়া বন্ধ করতে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
রক্ত আমাশয়ের পাশাপাশি উপসর্গ নিয়ন্ত্রণে কিছু ওষুধ ব্যবহার করা হয়। যেমন ওর স্যালাইন শরীরের পানিশূন্যতা রোধে কার্যকর। গুরুতর ক্ষেত্রে স্যালাইন দেওয়া হতে পারে। এছাড়া পেটের ব্যথা কমানোর জন্য ড্রটাভেরিন বা হাইসিন বাটইলব্রোমাইড ব্যবহৃত হয়। সঠিক ওষুধ ও মাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ আবশ্যক।
দীর্ঘদিন আমাশয় হলে কি হয়
দীর্ঘস্থায়ী আমার শরীরে পুষ্টির ঘাটতি এবং মন্ত্রের গতি সৃষ্টি করে। রক্ত আমাশয় কতদিন থাকে সঠিকভাবে বলা যায় না তবে দীর্ঘস্থায়ী হলে এটি রক্তক্ষরণ এবং লিভার অ্যাবসেস এবং ইমিউন সিস্টেম দুর্বলতার ঝুঁকি বাড়ায়। সঠিক চিকিৎসা না হলে পুষ্টিহীনতা এবং অন্যান্য সংক্রমণের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
- দীর্ঘস্থায়ী আমাশয় হলে অন্ত্রের দেয়াল ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণের ঝুঁকি থাকে। এটি শরীরে রক্ত অল্পতা বা অ্যানিমিয়ার কারণ হতে পারে। পর্যাপ্ত রক্ত সরবরাহ না হওয়ায় রোগীর শারীরিক দুর্বলতা বৃদ্ধি পায় এবং দীর্ঘমেয়াদে হৃদযন্ত্রে প্রভাব ফেলতে পারে।
- দীর্ঘদিন আমাশয় এর কারণে শরীর সঠিকভাবে খাদ্য শোষণ করতে পারে না যার ফলে পুষ্টির অভাব দেখা দেয়। বিশেষ করে প্রোটিন এবং গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থের ঘাটতি হয়। এটি শিশুদের বুদ্ধি বৃদ্ধি ব্যাহত হয় এবং প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে মারাত্মক শারীরিক দুর্বলতা ও ওজন কমের কারণ হতে পারে।
- প্রোটোজোয়াল আমাশয় দীর্ঘমেয়াদে লিভারের উপর প্রভাব ফেলতে পারে বিশেষ করে এন্টামিবা হিস্টোলিটিকা এর ক্ষেত্রে। এটি লিভারের টিস্যুতে পুঁজ জমিয়ে অ্যাবসেস সৃষ্টি করতে পারে যা খুবই ব্যথা দায়ক এবং চিকিৎসা না করলে গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে।
- দীর্ঘস্থায়ী আমাশয়ে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়ে। এটিই রোগীকে অন্যান্য সংক্রমণ বিশেষ করে অন্ত্র সংক্রান্ত রোগ এবং ত্বকের সংক্রমণের ঝুঁকিতে ফেলে। এমনকি সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়লে সেপসিসের মতো জীবন সংশয়ই অবস্থা তৈরি করতে পারে।
শিশুদের রক্ত আমাশয় হয় কেন
শিশুদের রক্ত আমাশয়ের প্রধান কারণ হলো দূষিত খাবার ও পানীয়। শিশুরা প্রায় বাইরে থেকে অস্বাস্থ্যকর খাবার বা রাস্তার পাশে বিক্রি হওয়া পানীয় পান করে যা ব্যাকটেরিয়া বা প্রোটোজোয়ার সংক্রমণ ঘটায়। এবং তাদের শরীরে অস্বাভাবিক কিছু লক্ষণ দেখা যায় যা আমাশয় এর লক্ষণ হিসেবে পরিচিত এবং রক্ত আমাশয় কতদিন থাকে শিশুদের শরীরে তা কোনভাবে বলা যায় না। শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয় এ ধরনের সংক্রমণ তাদের দ্রুত অন্ত্রে ছড়িয়ে পড়ে।
আরো পড়ুনঃ রক্তে হিমোগ্লোবিন কমার লক্ষণ
শিশুরা সাধারণত পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন থাকে না খাওয়ার আগে বা টয়লেট ব্যবহারের পর হাত না ধোয়া, ময়লা খেলনা মুখে দেওয়া বা মাটি দিয়ে খেলা করার ফলে তা সহজে তাদের দেহে জীবাণু প্রবেশ করে। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোতে যখন স্যানিটেশন সুবিধা সীমিত সেখানে শিশুরা রক্ত আমাশয়ের ঝুঁকিতে বেশি থাকে।
শিশুরা প্রায় একে অপরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে মিশে থাকে এবং বিশেষ করে স্কুল বা প্লে গ্রুপে। সংক্রমিত শিশুর ব্যবহার করা খাবারের পাত্র এবং খেলনা বা তোয়ালে অন্য শিশুরা ব্যবহার করলে সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এমনকি ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া বাহিত মল দিয়ে দূষিত জায়গায় খেলা করলেও রক্ত আমাশয়ের ঝুঁকি বাড়ে। যথাযথ পরিচর্যা এবং সচেতনতা না থাকলে এই সংক্রমণ শিশুদের মধ্যে মহামারীর মতো ছড়িয়ে যেতে পারে।
ORS কি আমাশয়ের জন্য ভালো
আমাশয়ের কারনে শরীর থেকে অতিরিক্ত পরিমাণে পানি ও ইলেকট্রোলাইট বের হয়ে যায় যা পানি শূন্যতার প্রধান কারণ ওর স্যালাইন ঘাটতি পূরণে অত্যন্ত কার্যকর। এটি শরীরের ইলেকট্রোলাইট ভারসাম্য বজায় রাখে এবং অন্ত্রের কার্যকারিতা স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে। বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে যারা দ্রুত পানি শূন্যতায় ভুগতে পারে ওআরএস তাদের রক্তচাপ ও রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ওর স্যালাইন শুধু পানি শূন্যতা রোধ করে না বরং অন্ত্রের কাজকর্ম পুনরায় স্বাভাবিক করতে ও সহায়তা করে। এতে থাকা সোডিয়াম এবং গ্লুকোজ অন্ত্রের কোষের মাধ্যমে দ্রুত শোষিত হয় যা শরীরকে তাৎক্ষণিক শক্তি সরবরাহ করে। গবেষণা দেখা গেছে ওর স্যালাইন গ্রহণের ফলে আমাশয়ের কারণে সৃষ্টি ক্লান্তি এবং দুর্বলতা দ্রুত কমে। এটি অন্ত্রের শোষণ ক্ষমতা বাড়িয়ে শরীরের সঠিক তরল ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
আমাশয়ের সময় পুষ্টি শোষণ ক শুরু কমে কমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে যা রোগীর জন্য আরো জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। ওর স্যালাইনের নিয়মিত গ্রহণ শুধুমাত্র পানি শূন্যতা নয় বরং শরীরে প্রয়োজনীয় মিনারেল ও পুষ্টি সরবরাহ করতেও কার্যকর। বিশেষ করে দীর্ঘস্থায়ী আমাশয় এটি একটি সহায়ক চিকিৎসা পদ্ধতি হিসেবে কাজ করে। এমনকি হালকা লবণ এবং চিনি মিশ্রিত ঘরোয়া সমাধান ও ওআরএসের মত কার্যকর হতে পারে যা সহজে লোভ্য এবং সাশ্রয়ী।
আমাশয় হলে কি মাছ খাওয়া যায়
আমাশয় এর সময় পুষ্টিকর কিন্তু সহজ খাবার খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ এবং হালকা সাদা মাছ যেমন রই বা পুটি মাছ একটি ভালো বিকল্প হতে পারে। এ ধরনের মাছ প্রোটিন সমৃদ্ধ এবং অন্ত্রের জন্য হালকা যা আমাশয়ের কারণে দুর্বল শরীরের দ্রুত পুষ্টি জোগাতে সহায়তা করে। তবে মাছ রান্নার সময় অতিরিক্ত তেল বা মসলা ব্যবহার এড়িয়ে চলা উচিত কারণ তা অন্ত্রের জ্বলা বাড়াতে পারে। সিদ্ধ বা হালকা গ্রিল করা মাছ এই সময় সবচেয়ে নিরাপদ।
আরো পড়ুনঃ ভিটামিন ডি যুক্ত খাবারের তালিকা
আমাশয়ের সময় চর্বিযুক্ত বা তেলে ভাজা মাছ খাওয়া থেকে বিরত থাকা ভালো কারণ এটি অন্ত্রে অতিরিক্ত চাপ তৈরি করতে পারে। চর্বিযুক্ত মাছ যেমন ইলিশ বা শুটকি, অন্ত্রের ব্যাহত করে এবং মল সঞ্চালন কে আর ও কঠিন করে তুলতে পারে। এ ধরনের মাছ পেটে এর ফোলা বা অস্বস্তি বাড়াতে পারে যা আমাশয়ের উপসর্গকে আরো জটিল করে তুলতে পারে।
মাছ খাওয়ার আগে এটি সম্পূর্ণ তাজা এবং সঠিকভাবে পরিষ্কার করা হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করা জরুরী। আমাশয়ের সময় দূষিত বা বাসি খাবার গ্রহণ করার রোগের তীব্রতা বাড়াতে পারে। অতিরিক্ত সংক্রমনের ঝুকি এড়াতে মাছ ভালোভাবে সিদ্ধ বা রান্না করতে হবে। এমনকি যারা মাছ খেতে অভ্যস্ত নয় তাদের জন্য হালকা মাছ রোগমুক্তিতে সহায়ক হতে পারে কারণ এটি দ্রুত শক্তি পুনরুদ্ধারের কার্যকর।
আমাশয় হলে কি দই খাওয়া যায়
আমাশয়ের সময় অন্ত্রের ভালো ব্যাকটেরিয়া গুলোর ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায় যা রোগের তীব্রতা বাড়াতে পারে। দুই একটি প্রাকৃতিক প্রবায়োটিক যা তন্ত্রের ভালো ব্যাকটেরিয়া পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করে। এতে থাকা ল্যাকটোবিল্যাস ব্যাকটেরিয়া অন্ত্রের প্রদাহ কমিয়ে রক্ত মিশ্রিত ডায়রিয়ার ঝুঁকি কমিয়ে দেয়। নিয়মিত দই খাওয়া অন্ত্রের স্বাভাবিক কার্যকারিতা বজায় রাখতে সহায়ক এবং হজম প্রক্রিয়া সহজ করে।
দই আমাশয়ের কারণে উত্তেজিত অন্ত্রের উপর একটি শীতল প্রভাব ফেলে যা রোগীর অস্বস্তি কমাতে সহায়তা করে। এতে থাকা প্রাকৃতিক এনজাইম এবং ল্যাকটিক এসিড অন্ত্রকে পরিষ্কার রাখে এবং দ্রুত আরোগ্য লাভের সহায়তা করে। তবে দইয়ের সঙ্গে চিনি বা অতিরিক্ত মিষ্টি যোগ করা উচিত নয় কারণ চিনি অন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধিতে সাহায্য করতে পারে। সাদা দই বা হালকা লবণ মিশ্রিত দই এই অবস্থায় সবচেয়ে উপকারী।
যদিও দই আমাশয়ের জন্য বেশি উপকারী তবে এটি শুধুমাত্র তাজা এবং পরিষ্কার হতে হবে। বাসি বা খারাপ ভাবে সংরক্ষিত দই খেলে অন্ত্রের সংক্রমণ আর ও বেড়ে যেতে পারে। এছাড়া যারা দুই হজম করতে পারেন না বা ল্যাকটোজ, অসহিষ্ণু, তাদের জন্য এটি ক্ষতিকর হতে পারে। এই অবস্থায় দই খাওয়ার আগে চিকিৎসকদের পরামর্শ নেওয়া উচিত। সঠিকভাবে গ্রহণ করলে দই আমাশয় থেকে দ্রুত সেরে উঠতে প্রাকৃতিক এবং কার্যকর সমাধান।
আমাশয় হলে কি কলা খাওয়া যাবে
আমাশয়ের সময় শরীর দ্রুত শক্তি হারায় এবং এই ঘাটতি পূরণে কলা একটি কার্যকর ফল। এতে প্রাকৃতিক শর্করা এবং ফাইবার থাকে যা শরীরে তাৎক্ষণিক শক্তি জোগাতে সাহায্য করে। কলার সহজপাচ্য কার্বোহাইড্রেট পেটের উপর কোন অতিরিক্ত চাপ না দিয়ে হজম হতে পারে। পাশাপাশি এটি অন্ত্রকে আরাম দেয় এবং ডায়রিয়ার কারণে হওয়া পানি শূন্যতা কমাতে সাহায্য করে।
আরো পড়ুনঃ সকালে ব্যায়াম করার ১০টি উপকারিতা
কলা অন্ত্রের প্রদাহ কমিয়ে স্বাভাবিক কার্যকারিতা পুনরুদ্ধারের সহায়তা করে। এতে থাকা পেকটিন ফাইবার অন্ত্রের চলন নিয়ন্ত্রণ করে এবং মলকে ঘন করে তোলে। আমাশয়ের কারণে যারা মল অতিরিক্ত তরল হচ্ছে বলে ভুগছেন তাদের জন্য কলা একটি প্রাকৃতিক প্রতিকার। এতে থাকা পটাশিয়াম শরীরের ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে যা ডায়রিয়ার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
যদিও কলা আমাশয়ের জন্য উপকারী তবে এটি অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া ঠিক নয়। বিশেষ করে পাকা কলা খাওয়া উচিত কারণ কাঁচা কলা হজমে সমস্যা করতে পারে। কলা খাওয়ার আগে এটি ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করতে হবে। এছাড়া যাদের কলার প্রতি এলার্জি রয়েছে তাদের এড়িয়ে চলা উচিত। সঠিক পরিমাণ এবং সঠিকভাবে কলা খেলে আমাশয়ের সময় শরীরকে দ্রুত সুস্থ করে তুলতে সাহায্য করে।
কি পাতা খেলে আমাশয় ভাল হয়
আমাশয় ভালো করতে পেয়ারা পাতা অত্যন্ত কার্যকর। পেয়ারা পাতায় থাকা প্রাকৃতিক এন্টি ব্যাকটেরিয়াল এবং এন্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান অন্ত্রের প্রধান এবং সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। বিশেষত পাতা সেদ্ধ করে সেই পানীয় পান করলে অন্ত্রের চলাচল স্বাভাবিক হয় এবং ডায়রিয়া তীব্রতা কম হয়। এটি রক্ত মিশ্রিত ডায়রিয়া কমাতে এবং দ্রুত আরোগ্য সহায়ক।
ধনেপাতার রস বা সেদ্ধ পানি আমাশয়ের সময় পেটে আরাম দেয়। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ডাইজেস্টিভ এনজাইম অন্ত্রের জন্য উপকার এবং হজম শক্তি উন্নত করে। ধনেপাতা শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে যা আমাশয়ের সময় জ্বর থাকলে উপকারে আসে। এর প্রাকৃতিক তিক্ত স্বাদ অন্ত্রের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে সহায়ক।
বেলপাতা আমাশয়ের প্রাচীন একটি ভেষজ প্রতিকার। বেল পাতার সেবন অন্ত্রের প্রদাহ কমিয়ে হজমের সহায়তা করে। বেলের রস বা পাতার পেস্ট তৈরি করে সেবন করলে অন্ত্র পরিষ্কার থাকে এবং রক্ত মিশ্রিত মল দ্রুত নিয়ন্ত্রনে আসে। এটি অন্ত্রের ক্ষতিকর জীবন ধ্বংস করে এবং দীর্ঘস্থায়ী আমাশয়ের ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
লেখকের শেষ কথা
রক্ত আমাশয় কতদিন থাকে, আর্টিকেলটি শেষ পর্যায়ে একটাই কথা বলব যে আর্টিকেলটির মধ্যে রক্ত আমাশয় এবং রক্ত আমাশয় এর সমাধানের ওষুধ আর কি খেলে আমাশয় ভালো হবে আর কি ফলে কতটুকু উপকারিতা পাবেন আমার সহ এর সমাধানে সে বিষয় নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি এখান থেকে জানতে পারবেন বিস্তারিত।
এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্যমূলক আর্টিকেল যদি আরো পড়তে চান তাহলে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন। কারণ আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত তথ্যমূলক আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি। 37147
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url